
তুফানগঞ্জে নতুন আতঙ্কের নাম এনআরসি
কোচবিহারের তুফানগঞ্জের শালবাড়ি গ্রামে হঠাৎ করেই নেমে এসেছে দুশ্চিন্তার ছায়া। গ্রামের মোমিনা বিবির হাতে আবারও পৌঁছে গেল অসম এনআরসির নোটিস। এর আগে দু’বার নোটিস এসেছিল তাঁর নামে। গত বছরের নোটিসটি হারিয়ে ফেলার পর কয়েক মাস আগে আরেকটি নোটিস আসে। আর এবার বুধবার রাতে পৌঁছে গেল নতুন নোটিস।
নোটিস হাতে পেয়ে আতঙ্কিত মোমিনার পরিবার
মোমিনা বিবি বলেন,
“বিয়ের সূত্রে প্রায় চল্লিশ বছর আগে আমি অসমের ধুবুরিতে গিয়েছিলাম মাত্র কয়েক মাসের জন্য। তারপর স্বামীকে নিয়ে তুফানগঞ্জে ফিরে আসি। পরে আমাদের বিচ্ছেদ হয়। এরপর আর কখনো অসমে যাইনি। অথচ হঠাৎ করে কেন আমাকে নোটিস দিল, বুঝতে পারছি না।”
মোমিনার ছেলে মোজাম্মেল মিঁয়া জানালেন
“আমরা খুব আতঙ্কিত। মা কয়েক মাসের জন্যই গিয়েছিলেন, তারপর থেকে এখানেই আছেন। অথচ তাঁকে নোটিস দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।”
রাজনৈতিক মহলের প্রতিক্রিয়া
বৃহস্পতিবার তৃণমূল জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক (হিপ্পি) স্বয়ং মোমিনার বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন,
“এর আগে উত্তমকুমার ব্রজবাসী ও নিশিকান্ত দাসের নামেও এনআরসি নোটিস এসেছিল। এবারে মোমিনা বিবিকে দেওয়া হলো। রাজনৈতিকভাবে হেরে গিয়ে অসম সরকার সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে।”
প্রশাসনের নীরবতা ও গ্রামাঞ্চলের আতঙ্ক
কোচবিহার জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে স্থানীয়দের মতে, এ ধরনের নোটিস গ্রামে গ্রামে অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলছে। অসম এনআরসি নিয়ে কোচবিহারের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে এখন বাড়ছে ভয় ও অনিশ্চয়তা।
মোমিনা বিবির ঘটনা আবারও প্রমাণ করল, সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে সাধারণ মানুষের মনে এনআরসি নিয়ে আতঙ্ক এখনও রয়ে গেছে। প্রশাসনের স্পষ্ট অবস্থান না আসা পর্যন্ত এই আতঙ্ক সহজে কাটবে না বলেই মনে করছে স্থানীয়রা।